Ireen Rhyme

Sunday, March 9, 2014

নারী

নারী 
- আইরিন

কিশোরী নন্দিনীকিংবা রমনী, সব রূপে সিদ্ধ নারী।
অর্ণবের গহব্বরেমুক্তো যেমনটি করে সুপ্তাবস্থায় রয় লুকায়ে,
তেমনি করে শৈশব-কৈশোরে রয় তনয়া নিদ্রা বিভোর হয়ে।

কত’ইনা রাত্রিকাঁটায় সে অক্ষিপটে স্বপ্ন লয়ে,
জয়ো মুকুট পড়বেবলে কল্পনার রাজ্যে স্বপ্ন বুনে।
বাস্তব বড়ই কঠিন কেতারে এ কথা বুঝাবে?
সত্য মিথ্যা তফাৎবুঝার সাধ্য কি তার আছে!

থাক না সে আরোকিছুকাল ঘুমঘোরে,
হয়তো কিছুক্ষণপরেই তাকে নামতে হবে জীবনের রণক্ষেত্রে।
বাস্তবতা বলেকারে বুঝবে সে অকপটে,
ভয় শুধু হয় এইভেবে,  মুখ থুবড়ে না পরে শেষে।

কৈশোর পেরিয়ে পড়লযখন পা যৌবনের আঙ্গিনাতে,
প্রথম ভোরের কোমলকিরণ জুরাল তার অন্তর্দৃষ্টিকে।
যখন এল দুপুরবেলা শেষে, উঠল সূর্য কপালেতে;
স্বপ্ন আর সত্যেরমাঝে জীবন তরী উঠল কেঁপে।

কোন রকম তাল সামলেচলল তরী সম্মুখেতে,
কতশত বাঁধা-বিঘ্নেধরল সে হাল শক্ত হাতে।
এরপর এল সতেজবিকেল হিমেল হাওয়ায় মন উঠল নেঁচে,
এইবার সে সংসার সংগ্রামেনাম সে রমনী রূপে।

জীবনের এই শুভ লগনেআর নয় একা সে,
স্বামী সঙ্গেলড়বে সর্বক্ষেত্রে, সে তার’ই অর্ধাঙ্গিনী যে।
এ ঘোর’ও কাঁটল যেতার অতি অবিলম্বে,
এত যতনে পড়ায়েছিলযে কাঁকন, সে পায়ের শেঁকল বৈ কিছু’ই নয় হে।

প্রশ্ন জাগে হৃদয়কোটরে,
কেন এই শৃঙ্খলকেবল কামিনীর অলঙ্কার রূপে?
হইল না তার খুববেশি দেরি বুঝতে,
এ প্রশ্নএকেবারেই বৃথা পুরুষ শাসিত সমাজে।

প্রথমে কন্যাতারপর বোন, এরপরে স্বামীর সন্নিধ্যে,
কেবলি হতাশাকেবলি ত্যাগ এরি মাঝে জীবন কাঁটে।
ভাবল নারী এইবারবুঝি আসবে জীবনে সুখ-শান্তি,
জীবনের এই সাঝপ্রহরে পুত্রই হবে শেষকালের লাঠি।

হায়রে কপাল বড়’ইনির্দয়, তাও জুটল না তার ভাগ্যে,
আখির জলে ভাসায়হৃদয়, সে আজ বৃদ্ধাশ্রমের আঙ্গিনায় বসে।
এমনি করে জীবনেরকাল স্রোতে
হারিয়ে যায় নারী,কন্যা-বোন-স্ত্রী-মা রূপে।

সমস্ত জীবন দেয় সেকাঁটিয়ে, ত্যাগ আর বিসর্জনের মধ্যদিয়ে।
জীবনের প্রতিটিক্ষেত্রে যে রয় পুরুষের কায়া হয়ে,
তাদের’ই অবিচারআর অবজ্ঞাতে নারীর জীবনে রাত্রি নেমে আসে।

No comments:

Post a Comment